বর্ণাঢ্য আয়োজনে হিজলায় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ পালন।
আপডেট সময় :
২০২৫-০৮-১৮ ২২:৩২:০৩
বর্ণাঢ্য আয়োজনে হিজলায় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ পালন।
মামন জমাদার হিজলা প্রতিনিধি:
"অভয়াশ্রম গড়ে তুলি দেশি মাছে দেশ ভরি” এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে বরিশালের হিজলা উপজেলায় পালিত হচ্ছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৫। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও পোনা অবমুক্ত করণ এবং সচেতনতা সভা, বিভিন্ন লিফলেট বিতরণ ,বিলবোর্ড স্থাপন সহ এর কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ ইলিয়াস সিকদার এর সভাপতিত্বে ও মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
সোমবার (১৮ আগষ্ট), সকাল ১১ টায় হিজলা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি র্যালী বের হয়ে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ এর হলরুম গিয়ে শেষ হয়। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে উপজেলা হলরুম মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় অনুষ্ঠান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস সিকদার।
উপজেলা পর্যায়ে মৎস্য উৎপাদনে সফলতা ও মৎস্য খাতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৩ জন মৎস্য চাষিকে জাতীয় মৎস্য পদক প্রদান করা হয়। এছাড়াও উপজেলা পরিষদ অফিস সংলগ্ন পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস সিকদার।
অন্যদিকে মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের অংশগ্রহণে উপজেলার মৎস্য সম্পদের স্থায়ীত্বশীল এবং সর্বোত্তম ব্যবহার বিষয়ে মতবিনিময়, গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুকুর ও জলাশয়ের মৎস্য চাষে উদ্বুদ্ধকরণ এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান, সুফল ভোগীদের মধ্যে উপকরণ বিতরণসহ বিভিন্ন আয়োজন রয়েছে সপ্তাহজুড়ে।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ ইলিয়াস সিকদার বলেন, বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। তবে আমাদের দেশীয় প্রজাতির মাছ উৎপাদনের দিকে মৎস্য চাষিদের মনোযোগী হতে হবে। তা না হলে দেশীও মাছ একটা সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে। সামুদ্রিক মাছের অবস্থান, গতিবিধি, মজুদ নিরূপণ ও আহরণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। ইতিমধ্যে প্রকৃত জেলেদের শনাক্ত করে তাদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র দেয়া হচ্ছে।
স্বাগত বক্তব্যে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, সামনে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান, আমরা সকল জেলেদেরকে আইন মেনে মাছ শিকারের আহ্বান জানাই। এ পর্যন্ত নিবন্ধিত প্রায় ১৮ লাখ ১০ হাজার জেলের মধ্যে ১৫ লাখ ৮০ হাজার জেলেকে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে।
২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন। যা অর্জন করতে খামার যান্ত্রিকীকরণের পাশাপাশি অত্যাধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় মৎস্যচাষ প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রতিটি পর্যায়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবীব আল আজাদ জনি, হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আমিনুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহীন আফ্রিদি, উপজেলা নৌ পুলিশের ইনচার্জ গৌতম মন্ডল,উপজেলা যুবদলের আহবায়ক দেওয়ান সালাউদ্দিন রিমন, উপজেলা মৎস্যজীবী সমিতির আহ্বায়ক মোঃ শাহজাহান রেজা, সদস্য সচিব মোঃ সোলাইমান জমাদার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সদস্য সচিব দুলাল সরদার, ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী নাসরিন খানম, সাধারণ সম্পাদক রুমা খানম সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা বলেন, "বাংলাদেশে প্রায় ২৬০ প্রজাতির মাছ আছে,তার মধ্যে ৫৪ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে"নদী-নালা, খাল-বিলে পোনা অবমুক্তকরণ, মৎস্য হ্যাচারি আধুনিকায়ন, খাঁচায় মাছ চাষ প্রযুক্তি ও অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বাড়াতে হবে। বর্তমানে বিশ্বের ৫০টিরও অধিক দেশে বাংলাদেশ মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মৎস্য সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স